ঘুম থেকে উঠেই নেট দুনিয়ায় ঘুরপাক খাচ্ছে একটি অডিও ক্লিপ। যা ইতোমধ্যেই ভাইরাল হয়েছে। যেখানে শোনা যায়, অশ্লীল ভাষায় চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহিকে দেখা করার জন্য বাধ্য করছেন তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান। সেখানে কথা বলতে শুনতে পাওয়া যায় চিত্রনায়ক ইমনকেও।
মূলত প্রতিমন্ত্রী ও এই নায়কের কথোপকথনটিই ভাইরাল হয়েছে। যেখানে মাহি ছিলেন তৃতীয় পক্ষ। এ বিষয়টি নিয়ে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেছেন নায়ক ইমন। তিনি বলেন, ‘অডিও ক্লিপটি সঠিক। অপর প্রান্তে ছিলেন প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান। তবে ঘটনাটা দুই বছর আগের। একটি ছবির মহরত অনুষ্ঠানের আগের রাতে ফোন দেন প্রতিমন্ত্রী।
ইমন আরও বলেন, ‘‘আমরা তখন একটা শুটিংয়ে ছিলাম। ছবির নাম ‘ব্লাড’। ডিরেক্টর সুমন ভাইসহ (ওয়াজেদ আলী সুমন) আমরা মিটিং করছিলাম। তখন উনি (প্রতিমন্ত্রী) হঠাৎ ফোন দিয়েছেন। তিনি কিন্তু প্রথমেই বলেছেন, ‘তুই ফোন ধরস নাই কেন?’ পরে উনিই আবার ফোন দিয়েছেন। এটা ২০২০ সালের করোনারও আগের ঘটনা। একজন মন্ত্রী বারবার ফোন দিচ্ছেন, আমি কিন্তু বলেছি, ‘হ্যাঁ, ভাই আসতেছি। দেখছি ভাই’। খারাপ কিছু কিন্তু বলিনি। এরমধ্যে কিন্তু অনেক সময় পার হয়ে গেছে। আমি কিন্তু বারবার বলছি, ‘দুই মিনিট ভাইয়া, নামছি’।’’
কিন্তু চিত্রনায়ক ইমন কেন মন্ত্রীর কথায় কাউকে নিয়ে যাচ্ছেন অথবা মন্ত্রীকে প্রশ্রয় দিচ্ছেন? এমন অভিযোগ এসেছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। এই প্রশ্নের উত্তরে নায়ক বলেন, ‘আমি কি কোনো নায়িকাকে নিয়ে এভাবে যাব? আপনার কী মনে হয়? এমন কোনো অভিযোগ কেউ আমার বিরুদ্ধে বলতে পারবেন? আমি যে তাকে (মাহি) নিয়ে গেছি, এমন কোনো কথা সেখানে নেই। আমি কিন্তু যাইনি। আমি শুধু সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেছি।’
পরদিন কী মন্ত্রী আবারও যোগাযোগ করেছিলেন বা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এমন প্রশ্নে ইমন বলেন, “সত্যি বলতে, উনি এত উপরের জায়গায় যে আমি উনার সঙ্গে কী তর্ক-বিতর্কে যেতে পারবো? আর পরদিন ছিল আমাদের মহরত। আমরা ছবির কাজ নিয়ে ব্যস্ত ছিলাম। এরপর উনি আর বিষয়টি নিয়ে তেমন কথা বলেননি। তবে আরও একটা বিষয়, আমাদের মহরত হয়েছিল কিন্তু ২০২০ সালের মার্চের প্রথম সপ্তাহে। এরপরই তো করোনা শনাক্ত হলো (৮ মার্চ)। ঢাকা শহর লকডাউনে গেল। আমরা কিন্তু যে যার মতো ঘরে চলে গেলাম।’’
ইমন জানান, সেদিনের মিটিং হয়েছিল বনানীর একটি রেস্তোরাঁয়। এরপর রাতে তারা বাসায় চলে যান। মাহি কেমন প্রতিক্রিয়া দিয়েছিল জানতে চাইলে এই নায়ক বলেন, ‘মাহিকে যে এভাবে প্রতিমন্ত্রী গালিগালাজ করেছেন, আমি জানতাম না। মাহির হাতে ফোনটা দিয়ে আমি তখন ডিরেক্টরের সঙ্গে স্ক্রিপ্ট নিয়ে কথা বলছিলাম। প্রতিমন্ত্রীর ফোনটি আমার নম্বরে এলেও আমার সেটে রেকর্ডিং অপশনই নেই। আর মাহিও তো একজন আর্টিস্ট। নিশ্চয়ই তিনি সহজভাবে নিতে পারেননি। বিষয়টি নিয়ে আমার সঙ্গে তিনি আলোচনাও সেভাবে করেননি। এরপর আমি চেষ্টা করছিলাম, কাজ শেষ করে বাসায় যেতে। মাহিও বাসায় চলে যান।’
ইমন মনে করেন, তথ্যপ্রতিমন্ত্রী হিসেবে তিনি যেকোনো আর্টিস্টকে ফোন দিতেই পারেন। কিন্তু এমন আচরণ অগ্রহণযোগ্য। তার দাবি, তিনি পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেছেন মাত্র।